
পাঁচ মাসে মিলিয়নিয়ার হওয়ার গল্প
হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন মাত্র পাচঁ মাসেরই মিলিয়নিয়ার। বলছিলাম , অ্যালেক্স টিউ এর কথা । লোন শোধের চিন্তা থেকেই মিলিয়ন ডলার আয়ের রাস্তা বের করলেন । তিনি ২০০৫ সালের দিকে ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামে তিন বছর মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভর্তি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ঐতিন বছরে তখন অনেক স্টুডেন্ট লোন হয়ে যাবে। তখন তিনি এমন কিছু করতে চাচ্ছিলেন যেন কোন দীর্ঘমেয়াদি ঋণ না হয়।
তো সমস্যা থাকলে তো সমাধান হবেই । যেই কথা সেই কাজ । তিনি এমন একটা সাইট বানাতে চাচ্ছিলেন যাতে ১০ লাখ পিক্সেল থাকবে । তিনি প্রতিটি পিক্সেল কে ১ ডলার হারে বিক্রি করবেন বলে ঠিক করেন । যার মধ্যে ন্যূনতম ১০ * ১০ অর্থাৎ ১০০ পিক্সেলের একটি ব্লকে লোগো বসানো যাবে। মোট কথা হলো আপনি ১০০ ডলার দিয়ে একটি লোগো বসাতে পারবেন।
ব্যস্, আর কি যে কথা সেই কাজ । ঐসময়ে অ্যালেক্স ৫০ ডলার খরচ করে ডোমেন হোস্টিং কিনেন এবং দুদিন খেটে www.milliondollarhomepage.com তৈরি করে পেলেন।

সব তো হলো কিন্তু কিভাবে তিনি জানাবেন তার সাইটের কথা?
আমরা জনসাধারণরা যা করি ঠিক তিনিও তাইই করেছিলেন। তিনি প্রথমে তার বন্ধুবান্ধব ও আত্নীয় স্বজনকে অ্যাপ্রোচ করেন। তিনি কারো কাজ থেকেও বেশি চান নি । ঐ একটা লোগো সমপরিমাণ ১০০ পিক্সেলের জন্য ১০০ ডলার। এভাবে তিনি দুই সপ্তাহে ৪৭০০ ডলারের ফান্ড যোগার করতে সক্ষম হন।
কিস্তু মাত্র ৪৭০০ ডলার দিয়ে কি আর মার্কেটিং সম্ভব?
ঐ ফান্ড দিয়েই তিনি মার্কেটিং পরিকল্পনা করেন। ঐ ডলার দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়াও সম্ভব ছিলো না। আর তার আইডিয়া টা দিলো ইউনিক আর আশা ছিলো মিডিয়ারা তার ব্যাপারে আগ্রহী হতে পারে। তাই তিনি নির্দিষ্ট কোন মিডিয়ার কাছে না যেতে তিনি একটা পিআর কোম্পানিকে হায়ার করলেন। এবং তার আইডিয়ার কথা লিখে লন্ডনের সব মিডিয়ারে পাঠিয়ে দিন। আর সেই পিআর চোখে পড়লো বিবিসি ও গার্ডিয়ানের। ব্যস্ , আর কি তাদের আর বেশি পিছনে তাকাতে হয় নি। তাদের নিউজের সাথে সাথে বিক্রি হয়ে যায় তিন হাজার পিক্সেল ! আর তার পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে বিক্রয় হয়ে যায় আড়াই লক্ষ পিক্সেল !
এত কিছূর পর তো আর গ্লোবাল মিডিয়া বসে থাকতে পারে না ! তখন অ্যালেক্স পেয়ে গেল ৩৫ টি দেশের মিডিয়া কাভারেজ। আর শুরুর মাত্র ১৩৮ দিনের মধ্যে ৯ লাখ ৯৯ হাজারের পিক্সেল বিক্রয় করে পেলেন। আর বাকি ১০০০ ডলারের জন্য তিনি নিলামের ব্যবস্থা করলেন। এবং ১১ দিনের মাথায় শেষ পিক্সেল গুলোও ৩৮ হাজার ডলারে বিক্রয় হয়ে যায় । ফলে তার মোট বিক্রয় ১ মিলিয়নেরও বেশি তথা ১০ লাখ ৩৭ হাজার ডলার !
অ্যালেক্স কিভাবে তার সিম্পল আইডিয়া দিয়ে সফল হলেন?
প্রথমত তার আইডিয়াটা ছিলো সম্পূর্ণরূপে ইউনিক এবং যা এরকম কেউ কোন দিন ভেবেও দেখে নি। আর তার সাইটের ট্যাগ লাইন ছিল অনেকটা এরকম – ইন্টারনেট ইতিহাসের এক অংশের মালিক হন’। এরকম ইতিহাসের মালিক যে কেউ হতে চাইবে ।
দ্বিতীয়ত সে কিন্তু আইডিয়া প্রথেমে পাবলিক করে নি । কারণ যেকোনো কেউ এটি কে কপি করে পেলতে পারতো।
তৃতীয়ত , তার প্রাইজ টা তুলনামূলক ভাবে ছিলো বহনযোগ্যই।
আর তার মাকের্টিং পরিকল্পনা ছিলো অসাধারণ। কেননা সে যদি মিডিয়ার কাভারেজ নিতো তাহলে মানুষ সাইট খালি দেখে পিক্সেল নিতেে আগ্রহী হত না। মানুষ প্রমাণে বিশ্বাসী তার জন্য প্রয়োজন ছিলো প্রমাণ দেখানো যা সে তার বন্ধুবান্ধব ও আত্নীয়স্বজনের মাধ্যমে থেকে নিয়েছে। ফলে পরর্বতীতে মিডিয়া কাভারেজ পেয়েও তাকে কোন সমস্যায় পড়তে হয় নি।
তো কেমন লাগলো অ্যালেক্ম এর মিলিয়ন হওয়াার গল্পটি? অবশ্যই আমাদের জানাবেন।