
বিলিয়ন ডলার স্টার্টআপ – মুনির হাসান
বিলিয়ন ডলার স্টার্টআপ Review – মুনির হাসান
আজকে আমরা যে বইটি নিয়ে কথা বলবো সেটা হচ্ছে মনির হাসান স্যারের বিলিয়ন ডলার স্টার্টআপ বইটি নিয়ে।
মুনির হাসান সম্পর্ক জানতে ঘুরে আসতে পারেন মুনির হাসান ডট কম থেকে ।
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন কি নিয়ে লিখা! বিলিয়ন টাকা হলেও হতো গুনতে পারতাম কিন্তু এগুলো তো বিলিয়ন ডলারের গল্প! মুনির স্যারের মত আমিও ডলার গুনতে শুরু করলাম। আগে বই অর্ডার দিয়ে তারপর ডলারের হিসাব করতে বসে পড়েছিলাম। যদিও পরবর্তীতে দেখলাম বইতে সহজ ভাষায় তা দেয়া আছে। কিছু কিছু বই আছে যেগুলো আপনাকে গল্প শোনাবেও সাথে বুঝতে, শিখতে ও চিন্তা করতেও সাহায্য করবে। আপনি যদি নিচক গল্প প্রেমিকও হোন তাহলে গল্প যেমন নিতে পারবেন সাথে ফ্রি নোটও পেয়ে যাবেন।
বিলিয়ন ডলার স্টার্টআপ বইটি কি নিয়ে লিখা?
মূলত বইটিতে ১৩ টি ভিন্নধর্মী স্টার্টআপ সর্ম্পকে বলা হয়েছে। যাদের মার্কেট ভেল্যু বিলিয়ন ডলারেও উপরে! প্রত্যেক টি গল্পই আপনাকে নতুন নতুন কিছু বুঝতে , ভাবতে শিখাবে। প্রত্যেকটি গল্পেরই রয়েছে ভিন্নতা। আপনি যদি ভেবে থাকেন , বিলিওনিয়ার প্রতিষ্ঠান শুরু করতে অনেক অনেক অর্থের প্রয়োজন তাহলে বইটা পড়লে আপনার ভুলটা ভাঙ্গবে। অর্থের প্রয়োজন হবে সেটা ঠিক , তবে সবচেয়ে বড় হচ্ছে আত্নবিশ্বাস ,মনোবল, কাজ করার ইচ্ছা। শুধু পরিকল্পনাই করে গেলেন আর মাঠে নামলেন না, তাহলে ফলাফল শূণ্যই থাকবে। সমস্যা থেকেই প্রয়োজনীয়তার সৃষ্টি হবে। বইয়ের শেষাংশে “পাচঁ মাসেই কোটিপতি” গল্প থেকে বুঝতে পারবেন সমস্যা থেকে সমাধানের উপায় বের করার রহস্য।
বইটিতে পেপাল , ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, গ্রামীণফোন, এয়ারবিএনবির সব আরো সাতটি স্টার্টআপ নিয়ে লিখা। পেপালে যারা কাজ করতো তাদেরকে কেন পেপাল মাফিয়া বলা হত । পেপাল মাফিয়ার গল্প আমি বইয়ের প্রথমেই পাবেন। প্রথম দিকের পেপালের ৫০ উদ্যোক্তাদের মধ্যে এখন প্রায় অনেকেই গড়ে তুলেছেন বিলিয়ম ডলারের প্রতিষ্ঠান। লিংকডইন, ইউটিউব, টেসলা, নিউরালিংক, ওপন এআই ইত্যাদি আরো বিলিওনিয়ার প্রতিষ্ঠান গুলো পেপাল মাফিয়াদেরই করা। কিন্তু এগুলো সব সাফল্যের কথা। সাফল্যের জন্য করতে হয়েছিলো তাদের কঠোর পরিশ্রম ।

সবগুলো গল্পই ভালো লেগেছে। তবে কিছু গল্প বেশি ভাবিয়ে তুলেছে। যেমন: এয়ারবিএনবির গল্প যাদের কে বলা হয়েছে তেলাপোকাঁ উদ্যোক্তা । শুনতে হাস্যকর হলেও পড়লেই বুঝতে পারবেন কেন বলা হয়েছি। তারা তাদের ফান্ড জোগার জন্য যখন ১৫ জনের কাছে গেল তাদের মধ্যে থেকে ৮ জনই কোন পাত্তা দিলো না আর বাকি ৭ জন থেকেও কোন পজেটিভ কিছু পায় নি। তাও কি তারা বসে ছিলো? না , তবুও তারা তাদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো।
এয়ারবিএনবি থেকে যা শিক্ষা নিতে পারেন, তার মধ্যে প্রথম হলো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে নিতে হলে আপনাকে হতে হবে ধৈয্যশীল হবে , হাল ধরার মানসিকতা থাকলে হবে, গ্রাহকের চাহিদা বুঝতে হবে , প্রচুর শেখার আগ্রহ থাকতে হবে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থার মত মার্কেটিং প্ল্যান করতে হবে। প্রতিষ্ঠান যে পযার্য়েই থাকুন না কেন তাকে এগিয়ে নিতে A/B টেস্ট করতে হবে, কাস্টমার সার্ভিস এর মান উন্নত করতে হবে ও কোন কিছুকে লুকিয়ে না রেখে বরং তা নিজ অবস্থা থেকে বণর্ণা করতে হবে। যা এয়ারবিএনবিরা প্রতিনিয়তই করেছিলো।
সমস্যা থেকেই সৃষ্টি হয় উদ্যোগের। তারই একটি বড় উদারহণ হচ্ছে গ্রামীণফোন। যা বর্তমান ভ্যলু প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। জনাব ইকবাল কাদির এর হাত ধরেই এসেছে আজকেই গ্রামীণফোন । তবে তার জন্য তার যাত্রাটাও ওতোটা সুখোকর ছিল না। যে সময়ে মানুষের মৌলিক চাহিদা মিটানোই সম্ভব হয়নি ,সে সময় তিনি উদ্যোগ নেন সাশ্রয়ীভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ।
এছাড়াও বইতে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে ডিভিডি থেকে আজকের প্রায় ২২০ বিলিয়ন ডলারের নেটফিক্স , ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম , zoho মত আরো প্রতিষ্ঠানের গল্প । সেগুলো সম্পর্কে নাই বললাম, সেগুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন।
পরিশেষে,
বইটি সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে প্রত্যেকটি গল্পের শেখে একটা শিখনফল দেয়া যা আপনাকে সহজে মনে রাখতে এবং নোটের মত কাজ করবে। আর বই ছিলো নিতান্তই সহজ ভাষায়। সর্বোপরি অসাধারণ একটি বই ,যদি বইটির সাধারণ পড়ার মত নয় , জানার মতো করেই পড়বেন। তাহলেই উপকৃত হবেন।
বইটি রকমারি থেকে সংগ্রহ করতে এখানে ক্লিক করুন।